মে দিবসের কিছু কথা

১৮৮৬ সালের আগেও ১লা মে ছিল …কিন্তু তা সাধারণ দিনের মতোই…..

১৮৮৬ সালের আগে শ্রমিক দের অবস্থা কেমন ছিল..??..না কোন প্রশ্ন নয়…কোন জিজ্ঞাসা নয়..তা ইতিহাস…

আসুন আজ আমি ‘মে দিবস’ এক জন মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি….সেই মানুষটির নাম (শ্রমিক)।

আমি শ্রমিক বলছি…….১৮৮৬ সালের আগে আমাদের প্রতিদিন কাজ করতে হত দৈনিক ১১থেকে ১৩ ঘন্টা কেও ভাবতো না….তারা পশু ও শ্রমিকে এক ভাবতো…..ও আমি ভুলে গেছি পরিচয় করিয়ে দিতে। তারা হলেন মহান,

আমাদের প্রভু আমারর দাস, তারা বাবু।কিন্তু আমরা কতদিন সহ্য করবো এই পাশবিক অত্যাচারের। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে আমারা মিলিত হই মিছিল করে আপনার দিনেই (মে দিবস)।

একত্রিত হয়ে আমরা শ্লোগান তুলি ‘পুজিবাদী মানুষের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’…

দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবি মানতে হবে……মানতে হবে………..

আমরা সমবেত হই আগস্ট স্পীজ নামে এক জন মহান নেতার নেতৃত্বে……

এই একত্রিত সমাবেশকে আমাদের প্রভুরা ভয় পান……এতটাই দৃপ্ত শ্লোগান যে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন….

অর্তকীতে পুলিস গুলি চালায়…সাথে সাথে ১১ জন আমরা (শ্রমিকেরা)প্রাণ দিই…১৮৮৬ সালের ১লা মে দিনে

অনেকে জেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়…বিচারে ৬ জনের ফাঁসি হয়…আগস্ট স্পীজ এরও ফাঁসি হয়…

তিনি তাঁর শেষ কথা বলে গেলে ফাঁসির মঞ্চে…. ‘আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে’…..

আমি শ্রমিক…মাহান নেতার জন্য একটিই গান গাই….

“ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান

আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান

আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ? এর পর প্রায় তিন বছর কেটে গেছে……..

১৮৮৯ সালে ১লা মে, হে মার্কেট বর্বর ভাবে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্যারিসে সমাজতন্ত্রী ও শ্রমিক পার্টি ১লা মে দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন…

এর পর থেকেই সারা পৃথিবীতে শ্রমিক স্বাধীনতার ঝড় ওঠে….ধর্মঘটৈর মাধ্যমে মালিকপক্ষকে নতি স্বীকার করানো হয় বহু জয়গায়..

আমরা (শ্রমিকরা)বলে উঠি.. ‘শোকতপ্ত হয়ো না, সংগঠিত হও’…..

বহু রক্তাক্ত পথ অতিক্রম করে….আজ দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবি স্বীকৃত..সপ্তাহে এক দিন ছুটি……

মে দিবস’আমি (শ্রমিক)আপনাকে ধন্যবাদ জানাই………।

ধন্যবাদ শ্রমিক বন্ধু…………কিন্তু আমি (মে দিবস)যদি প্রশ্ন করি সত্যই কি আপনি এখনো স্বাধীন….

আপনাদের মধ্য শিশু শ্রমের পরিমান কত….মহিলা শ্রমিক কতে…কত টাকায় বা আপনার মজুরি…কতক্ষণ একনো কাজ করতে হয়..

না আপনিও সঠিক বলতে পরবেন না….তাহলে আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন আপনাদের অবস্থা….

আজকের বিশ্বায়নের যুগেও।

ওই যে শ্রমিক শিশু ওর বয়স কত??..আপনি কি সঠিক বলতে পারবেন…..

ওর এখন মায়ের কোলে খেলা করার কথা…

ওর তো এখন… পুতুল পুতুল খেলার কথা…..ও কেন ইট ভাঙে?? ও কেন পাথর বয়?

ওর তো এখোন স্কুলে যাবার কথা। ও এখানে কেন?

আমার কি এটাই কাজ?

মহিলারাও কেন কঠোর পরিশ্রম করেন…….

এই সব প্রশ্নের একটাই উওর….পেটের জ্বালা….

পেটের জ্বালায় কাঁদতে থাকে…..কাজ করতে করতে…বাবুরা খেতে দেয় না…।

তাহলে তাদের সরকার কেন দেখে না………কেন ওদের ভোট দেয়??

ওদের কোন দিন খাবার জোটে তো কোনদিন না……….

নিজেরাই জোগাড় করে উনুনের জ্বালানি।

কিন্তু ঘরে তো চাল নেই….ভাত খাবে কেমন করে….

তাই…………..

‘যে দিন ওদের ঘরে উনুন জ্বলে না, সেদিন ওদের পেট জ্বলে’…..পেটে গামছা বেঁধে থাকে খিদের জ্বালায়…

ভাবতে থাকে পরের দিন কাজ পাবোত?…..

ওরা প্রতিবাদ করে……..নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে রাজপথে মিছিল করে…..

নিজেদের অধিকার ছিলিয়ে নিতে…..ছিনিয়ে নিতে হবে নিজেদেরকেই……..

আর কেউ এদের মনে রাখে না………একমাত্র আমি ,মে দিবস এদের মনে রাখি……

চিরদিন মনে রাখব…….

মে দিবসের কিছু কথা মে দিবসের কিছু কথা Reviewed by khokan on 23:54 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.