নলিনী বাগচী

নলিনী বাগচী :- ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে কাঞ্চনতলায় নলিনী বাগচী জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতা ছিলেন ভুবনমোহন বাগচী । তিনি কর্মসূত্রে নদীয়া জেলার শিকারপুর থেকে কাঞ্চনতলা আসেন । নলিনীর বাল্যকালেই তার পিতার মৃত্যু হয় । তাঁর ডাক নাম ছিল পচা । ছাত্রজীবনের প্রথম ভাগ কাঞ্চনতলা জে ডি জে ইনস্টিটিউশন এবং পরে পাকুড় হাইস্কুলে অতিবাহিত করেন । পাকুড় হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন । তারপরে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তিসহ আই. সি . পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । 
     নলিনী বাগচী অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন । তিনি বিহারের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুশীলন সমিতির শাখা গড়ে তোলেন । ১৯১৬ সালের অক্টোবর মাস থেকে পুলিশের খাতায় তিনি ফেরার ছিলেন । ১৯১৭ সালে বালেশ্বরের খণ্ড যুদ্ধের পর সরকারী দমন নীতি প্রচন্ড রূপ ধারণ করলে বাংলার বিপ্লবীদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয় । নলিনী ও তার সহকর্মীরা পুলিশের ‌শ‍্যেন দৃষ্টি এড়াবার জন্য আসামের গৌহাটি শহরের একপ্রান্তে গোপন আস্তানা স্থাপন করেন । কিন্তু , একদিন এই গোপন আস্তানার খবর পেয়ে পুলিশ অফিসার ফেয়ারওয়েদার-এর নেতৃত্বে শীতের এক শেষ রাতে তাদের ঘেরাও করা হয় । শুরু হয় দু'পক্ষের তুমুল সংগ্রাম । একদিকে আধুনিক অস্ত্র সজ্জিত ব্রিটিশ বেতনভুক্ত কর্মচারীর দল , অন্যদিকে মাতৃমন্ত্রে দীক্ষিত কিছু নির্ভীক যুবক , যাদের সম্বল বলতে শুটিকয় রাইফেল ও পিস্তল । এই পরিস্থিতিতে পুলিশের দুর্ভেদ্য বেড়াজাল ভেদ করে নলিনী বাগচী ও প্রবোধ দাশগুপ্ত পলায়নে সক্ষম হন । তারপর নলিনী বাগচী শ্বাপদসঙ্কুল অরন্যপথ পায়ে হেঁটে পার হয়ে অত্যান্ত অসুস্ত অবস্থায় কলকাতা উপস্থিত হন । তখন তার সারা শরীর গুটিবসন্তে ছেয়ে গেছে ।  জ্বরে বেহুঁশ অবস্তায় গায়ে কম্বল ঢাকা দিয়ে গড়ের মাঠে পড়ে রইলেন । এই সময় বিপ্লবী অতীশচন্দ্র তাকে চিনতে পেরে কোলকাতায় গোপন আস্থানায় সেবা - শুশ্রুষা করে সুস্থ করে তোলেন । এরপরে তিনি বাংলার বিপ্লবী কর্মধারায় গতি আনার জন পূর্ব বাংলা বিপ্লবী সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় চলে যান । ঢাকায় কলতা বাজারে তিনি গোপন আস্থানা গড়ে তোলেন । বিপ্লবী তারিণী মজুমদার তার সঙ্গে সেখানে যোগাদান করেন । সেই সময় ব্রিটিশরা মরীয়া হয়ে উঠেছে বিপ্লবীদের উৎখাত করার জন্য । তাই এই গোপন আস্থানা আর বেশি দিন গোপন রইল না । একদিন পালাবার সমস্ত পথ অবরুদ্ধ করে বিশাল সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী তাদের ঘেরাও করে ফেলে । এই অসম সংগ্রাম -এ বাংলার দুই নির্ভীক বীরের মতো লড়াই চালিয়ে যান । তারিণী মজুমদার পুলিশের গুলিতে নিহত হলেও তিনি এককভাবে দক্ষতার সাথে লড়াই চালিয়ে যান । এক সময় সর্বাঙ্গে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রক্ত আবীরে আপ্লুত হয়ে নলিনী বাগচী পুলিশের হাতে ধরা পড়েন । 
      এমত অবস্থায় পুলিশ তার প্রকৃত পরিচয় জানার জন্য একাধারে প্রলোভন ও নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে । প্রত্যুত্তরে তিনি গর্জে উঠে বলেছিলেন , "Stop Dog , don't Disturb me . Let me die in peace."   নলিনী বাগচী চান নি কোনো খ্যাতি, কোনো যশ বা কোনো গৌরবগাথার নায়ক হতে । নিঃশব্দে তার কর্তব্য শেষ করে বাংলার বিপ্লবী কর্মধারাকে উজ্জীবিত করে ১৯১৮ সালের ১৫ জুন ( মতান্তরে ১৬ ই জুন অমৃতলোক যাত্রা করেন । 


অনুলিপি :- ধুলিয়ান ইতিবৃত্ত , সুমিত ঘোষ 
নলিনী বাগচী নলিনী বাগচী Reviewed by Dhuliyan City on 01:15 Rating: 5

ধুলিয়ান শহর

               ধুলিয়ান শহর

প্রাক্কথন : প্রাচীন কালে প্রধানত জলপথকে কেন্দ্র করে জনপদ গড়ে ওঠে । জনপদগুলি ভৌগোলিক কারণে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যকলাপের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে , ক্রমে তা উন্নীত হয় শহর বা নগরে । ধুলিয়ান শহরে গড়ে ওঠার পশ্চাৎ এ অর্থনৈতিক কারণটি সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে । এই শহরটি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় , জলপথকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের ব্যবসা - বাণিজ্যের প্রভূত উন্নতি ঘটে । ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকেই প্রধানত বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে এই অঞ্চনের নগর উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয় । ধুলিয়ানে বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মানুষের সমাবেশ ঘটতে থাকে । বলা ভালো , ধুলিয়ানে নানা ধর্ম ও ভাষাভাষীর মানুষ সমাগমের ফলে প্রায় এক সর্বভারতীয় অবস্থার সৃষ্টি হয় । সপ্তদশ শতকে ধুলিয়ানের পাশের শহর ঔরঙ্গাবাদ সৈন্য নিবাস হিসাবে গুরুত্ব পেলেও ধূলিয়ানের এক ধরনের কোনো ঐতিহাসিক গুরুত্ব ছিল না । তবে ভৌগোলিক কারনে ধুলিয়ান ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান । এক সময় পূর্ববঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বাণিজ্যের যোগাযোগ ঘটত ধূলিয়ানের মাধ্যমে । তাই ধুলিয়ান কে Gateway of North Bengal বলা হত । ধুলিয়ান ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম নদীবন্দর । ১৮৭২ সালে জনগননা অনুযায়ী বাংলার নগরশ্রেণীর মধ্যে ধূলিয়ানের স্থান ছিল একাদশতম । বর্তমান ধুলিয়ান শহরের প্রায় ৪-৫ কিমি দূরে ছিল পূবর্তন পরানপাড়া ধুলিয়ান বাজার , ধুলিয়ান গ্যাঞ্জেস রেলস্টেশন । বহুবার গঙ্গা ভাঙনের ফলে বর্তমানে ধুলিয়ান-কাঞ্চনতলা মিশে গিয়ে ধুলিয়ান শহরের সৃষ্টি হয়েছে ।

' ধুলিয়ান ' নামের কারন :- দাদাঠাকুর (শরৎ পন্ডিত ) কোন এক সময় মন্তব্য করেন -----

" ধূলি যদি নিতে চাও যাও ধূলিয়ান ( ধূলি - আন ) 

ধুলিয়ান নামের উৎপত্তি ও সার্থকতা সম্বন্ধে সঠিক কোন তথ্য অনুধাবন করা যায় নি । এই সম্পর্কে তথ্যের অপ্রতুলতার কারনে অনুমানের আশ্রয় নিতে হয়েছে । অনুমানের ভিত্তিতে বলা যায় যে ধুলিয়ান গঙ্গাতীরে অবস্থিত একটি ধূলিধুসরিত জায়গা ছিল । সেখানে পরে একটি গ্রাম এবং আরো পরে গঞ্জের উৎপত্তি হয়েছে । এই স্থানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসার ( সম্ভবত আনার ) ফলে একটি জনপদের সৃষ্টি হয়েছে । 
    ধুলিয়ান শব্দটি সৃষ্টি হয়ত ধূলিতে আয়ন অর্থাৎ ধূলিতে আগমনে ফলে হয়েছে । 
ধূলিয়ান = ধূলি + আন < আয়ন । আবার আয়ন শব্দটি স্থিতি > স্থাপন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে । ব্যাপক অর্থে ধূলোর উপর স্থাপন । অনুমান করা যায় যে , এক কারনেই স্থানটির নাম ধুলিয়ান হয়েছে । ধূলিয়ান বানানটি পরবর্তীকালে ধুলিয়ান হিসেবে প্রচলিত হয়েছে । 
     ধুলিয়ান শহরে নানা সংস্কৃতির লোকের বাসস্থান । তাই এখানে মিশ্র সংস্কৃতির বর্তমান । মিশ্র সংস্কৃতি  প্রমান করে যে এখানে বিভিন্ন সংস্কৃতির লোকের আগমন হয়েছিল । আবার দাদাঠাকুর - এর মন্তব্যে ধুলোর অবস্থানের কথা প্রমাণ করে । কাজেই ধুলিয়ান-এর নামকরণের পশ্চাৎ-এ এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা যেতে পারে । 
    ব্রিটিশ সময় কালে , ব্রিটিশ সরকারী কর্মচারীরা বিভিন্ন সরকারী নথিতে ধুলিয়ান-এর  ইংরেজি বানান বিভিন্ন ভাবে লিখেছেন, যেমন – DHOOLEAN , DHULIAN ,DHULIYAN ইত্যাদি । তবে এই নাম করনের কোনো ব্যাখ্যা তারা করেন নি । 
ধুলিয়ান শহর ধুলিয়ান শহর Reviewed by Dhuliyan City on 00:54 Rating: 5

কাঞ্চনতলা জে. ডি. জে. ইনস্টিটিউশন" এর ১২৩ বছর পুরোনো ভবনের স্মরণে


                 সুমিত ঘোষ

মুর্শিদাবাদ জেলার আধুনিক শিক্ষা জগতের মানচিত্রে কাঞ্চনতলা জে. ডি. জে. ইনস্টিটিউশন একটি অন্যতম বিদ্যালয়। জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের স্থাপনার সময়ের মাপকাঠিতে বিচার করলে এই বিদ্যালয় নিঃসন্দেহে প্রাচীনত্বের দাবি রাখে। প্রসঙ্গতঃ এই বিদ্যালয় জঙ্গিপুর মহকুমার দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিদ্যালয়।

বলাবাহুল্য, ধুলিয়ান-কাঞ্চনতলা এবং তৎসহ সমগ্র সামসেরগঞ্জ থানা এলাকার আধুনিক শিক্ষার সূচনা হয় কাঞ্চনতলা হাইস্কুল স্থাপনের মাধ্যমে। এর পূর্বে এই সমগ্র এলাকায় পাঠশালা বা নিম্ন বুনিয়াদী শিক্ষার প্রচলন থাকলেও প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার ও ইংরেজি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয় এই ঐতিহ্যমন্ডিত বিদ্যামন্দির স্থাপনার পর। এই সময় নিকটবর্তী বিদ্যালয় বলতে ছিল পাকুড় রাজ স্কুল।

কাঞ্চনতলার জমিদারের প্রতিষ্ঠাতা জগবন্ধু রায়ের সু-পুত্র প্রজাবৎসল জমিদার ভগবতীচরণ রায় ১৮৯৭ সালে কাঞ্চনতলা জগবন্ধু ডায়মন্ড জুবিলী ইনস্টিটিউশন স্থাপন করেন। ১৮৯৭ সালে ইংল্যান্ডশ্বরী ভিক্টোরিয়ার ডায়মন্ড জুবিলী অনুষ্ঠিত হয়। এই বিশেষ ঘটনাকে স্মরণ রেখে এবং পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে তৎকালীন জমিদার মহাশয় বিদ্যালয়টির  এইরূপ নামকরণ করেন। বিদ্যালয়টি প্রথমে মাইনর স্কুল ছিল । পরে ১৯০৮ সালে উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ের জন্য কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন লাভ করে।  প্রতিষ্ঠাকালে মি: এস. আর. কারপেট্রিক এবং পরে মি: এ. ডি. স্মিটন নামে দুই সাহেব প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। প্রাথমিক ভাবে এই বিদ্যালয়ের বোর্ডিংয়ে ক্লাস শুরু হয়। পরবর্তী কালে এই মূল ভবনটির নির্মাণ হয়। বহু গুণী ব্যক্তিদের সংস্পর্শে ও শিক্ষাদানে কালক্রমে এটি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। 

ইংরেজ সাহেব থেকে শুরু করে অসংখ্য গুণী মানুষের পদধূলিতে ধন্য হয়েছে কাঞ্চনতলার এই পবিত্রভূমি। হেমন্ত কুমার রায়, কবি নজরুলের দীক্ষা গুরু যোগীবর বরদা চরণ মজুমদার, শ্রীপতি ভূষণ দাস, বহুবল্লভ গোস্বামী, সৌরিন্দ্র নাথ রায়, নৃসিংহ প্রসাদ কালী, কার্তিক চন্দ্র চৌধুরী, নিহার কুমার চৌধুরীর, ব্যোমকেশ দাস, বসন্ত বাবু, শিবদাস ভট্টাচার্য, বেলাল হোসেন, তাজামুল হক, আবুল হোসেন সাহেব, গোপাল চন্দ্র নন্দী, নসিবুল্লা বিশ্বাস প্রমুখ মহান শিক্ষকরা জীবনভর তাঁদের শিক্ষা ও আদর্শে অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং সাফল্যের সোপান রচনা করেছেন। ১৯৯৭ সালে শ্রদ্ধেয় রমজান আলি মহাশয় মহাসমারোহে এই বিদ্যালয়টির শতবর্ষ উৎযাপন করেছেন।

১২৩ বছরের পুরনো এই বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি আজ শুধুই স্মৃতি। বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি সম্প্রতি নিরাপত্তার কারণে ভেঙে ফেলা হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই যুগান্তকারী। একদল শিক্ষিত মানুষ এই চরম সিদ্ধান্তের আগে বোধকরি  সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিবেচনা করেছেন এবং নিরুপায় হয়ে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

কাঞ্চনতলা স্কুলের ১২৩ বছরের ইতিহাসে, অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে কাঞ্চনতলা স্কুলের দিনগুলি আজও অমলিন ও মূল ভবনের স্মৃতি যেন এক ধ্রুবক। স্কুল জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের আলগোছে স্মৃতি আষ্টেপৃষ্ঠে কমবেশি সকলের মনন জগৎ কে ভারাক্রান্ত করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রত্যেকেই এই ভবনের স্মৃতিতে আবেগপ্রবণ হবেন। সারা বিশ্বব্যাপী কাঞ্চনতলার বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের স্মৃতিরমেদুরতায় আচ্ছন্ন হয়ে  বয়সন্ধিকালের বা যৌবনের মণি-মুক্ত খুঁজে বেড়াবেন। কিন্তু জন্মালেই তো মৃত্যু অবধারিত। এ সত্যকে অস্বীকার করি কি করে ! সু-চিকিৎসার জন্য মৃত্যু বিলম্বিত হতে পারে কিন্তু অন্যথা হবে না। 

কাঞ্চনতলা স্কুলের পুরোনো ভবন সম্পর্কে আরও একটা কথা না বলে পারছি না। এই ভবনটির বেশ কিছু অংশ মা গঙ্গার বুকে আগেই বিলীন হয়েছে। আজন্ম মা গঙ্গার সাথে এই মূল ভবনটির তিক্ত সম্পর্ক। বর্ষাকালে মা গঙ্গা প্রায় প্রতি বছরই এই ভবনটি গ্রাস করতে এসেছে আর ব্যর্থ হয়েছে। আর ভবনটি যেন শিখদের নবম ধর্মগুরুর  তেগবাহাদুরের মত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে "শর দে দেঙে, পর শির না দেঙে"। কখনো হার মানে নি। আজ অবশেষে ভবনটির মৃত্যু অন্যভাবে হলো বটে কিন্তু মা গঙ্গা গ্রাস করতে পারলেন না। এ যেন এক অদ্ভুত সমাপতন। 

কাঞ্চনতলার মূল ভবনের ধ্বংসাবশেষের দৃশ্য আমাদের প্রত্যেকের কাছে অত্যন্ত পীড়াদায়ক এবং অনাকাঙ্খিত। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন তাঁরা যেন ইট, কাট, ধুলো-বালির স্তূপে বন্দি আপামর ছাত্র-ছাত্রীদের শৈশব কে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হন। তা যে ভাবেই হোক না কেন .... নতুন প্রস্তাবিত  ভবনের কোনো অংশ পুরোনো আদলে গড়ে বা সেই ধ্বংসাবশেষের শেষ স্মৃতিচিহ্ন দিয়ে এক টুকরো বেদি গড়ে বা অন্য কোনোভাবে। কেননা এই প্রাচীন বিদ্যালয়টি আমাদের সকলের কাছে একটি উপাসনা গৃহেরও ঊর্ধ্বে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত এই বিদ্যালয়ের গৌরব অক্ষুন্ন রাখবেন এবং সেই বিষয়ে যত্নশীল হবেন বলে আশাব্যঞ্জক মনোভাব প্রকাশ করছি। কিন্তু জানি না কেন, বিমর্ষ হৃদয়ে  নজরুলের একটি বিখ্যাত গানকে আশ্রয় করে মনকে সান্তনা দিচ্ছি.......

"এ কুল ভাঙ্গে ও কুল গড়ে
এই তো নদীর খেলা (রে ভাই)
এই তো বিধির খেলা।
সকাল বেলার আমির রে ভাই
ফকীর সন্ধ্যাবেলা...."

#সুমিত ঘোষ।
#উৎসর্গ: কাঞ্চনতলার সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী।
#ছবি-প্রথম ঘোষ।
কাঞ্চনতলা জে. ডি. জে. ইনস্টিটিউশন" এর ১২৩ বছর পুরোনো ভবনের স্মরণে কাঞ্চনতলা জে. ডি. জে. ইনস্টিটিউশন" এর ১২৩ বছর পুরোনো ভবনের স্মরণে Reviewed by Dhuliyan City on 09:53 Rating: 5

খালি পায়ে কলেজ যাত্রা থেকে ইসরোর চেয়ারম্যান, অনুপ্রেরণা দেবে শিবনের জীবনযুদ্ধ

04:49

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি ইসরোর চেয়ারম্যান। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অভূতপূর্ব সাফল্যের অন্যতম কারিগর। চাঁদের এক্কেবারে কাছে পৌঁছে যাওয়া থেকে শুরু করে গগণযানের প্রস্তুতি। সবকিছুর পিছনে রয়েছে ডঃ কৈলাসাভাদিভো শিবনের প্রখর মস্তিষ্ক। একদিকে রাজনৈতিক চাপ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। দু’দিক সামাল দিয়ে যেভাবে চন্দ্রযান মিশন ৯৫ শতাংশ সফল হয়েছে, সেটাও তো কম কথা নয়। তাই, নিঃসন্দেহে ইসরোর চেয়ারম্যানের প্রশংসা প্রাপ্য। আসলে, লড়াইটা তিনি ছোটবেলা থেকেই শিখে এসেছেন। তাঁর স্কুলজীবন থেকে শুরু করে কলেজজীবন পর্যন্ত চরম দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে যেভাবে তিনি ইসরোর চেয়ারম্যান পদ পর্যন্ত পৌঁছেছেন, তা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত করার মতো।

এক প্রান্তিক কৃষক পরিবারে ১৯৫৭ সালে জন্ম শিবনের। ছোটবেলায় এতটায় আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন কেটেছে, যে পায়ে দেওয়ার মতো চটি বা জুতো কেনারও সামর্থ্য ছিল না। স্কুলে পড়াকালীন বাবার আম বাগানেও কাজ করতে হত। ছুটির দিনে তিনি খালি পায়ে আমবাগান পাহারা দিতেন। কাজ করতেন অন্য খেতেও। এমনকী কলেজে পড়াকালীনও আধুনিক পোশাক-আশাক কেনার মতো সামর্থ্য ছিল না শিবনের পরিবারের। দীর্ঘদিন তিনি কলেজ যেতেন ধুতি পরে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিবন একবার বলেন, “ছোটবেলায় আমার জীবন খুব মজার ছিল। স্কুলের পাশাপাশি আমাকে ফসলের খেতেও কাজ করতে হত। আমার বাবা কৃষক। আমের মরশুমে উনি আমের ব্যবসাও করতেন। ছুটির সময় আমি যখন বাড়িতে থাকতাম আমার বাবা কোনও শ্রমিক রাখতেন না। আমি তাঁকে সাহায্য করতাম।”

নিজের কলেজ জীবন নিয়ে শিবন বলেন,”এমনিতে পড়ুয়ারা কলেজ বাছেন নিজেদের পছন্দমতো। কিন্তু, আমার ক্ষেত্রে কলেজ বাছার শর্ত ছিল, কলেজটিকে আমার বাড়ির কাছে হতে হবে। আমি মাদ্রাজ আইআইটিতে ভরতি হওয়ার পর্যন্ত খালি পায়ে হাঁটতাম। এমনকী আমাদের পাজামাও ছিল না। ধুতি করেই চলত। আসলে, আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু, আমার বাবা বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া খরচসাপেক্ষ। আমি প্রতিবাদ করি। এমনকী এক সপ্তাহ না খেয়ে ছিলাম। কিন্তু, তাতেও আমার বাবাকে টলাতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত নিজেই মত বদলাই। তারপর অঙ্ক নিয়ে বিএসসি করি। বিএসসি পাশ করার পর বাবা বললেন, আমি একবার তোমাকে আটকেছি, আর আটকাব না। নিজের জমি বিক্রি করে তোমাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াব।”

ইসরো চেয়ারম্যান বলেন,”এরপরই আমি বি-টেক করি। তারপর বেশ কিছুদিন চাকরির অভাবে ভুগেছি। সেসময় একমাত্র হ্যালেই চাকরির সুযোগ ছিল। কিন্তু আমি চাকরিটা পায়নি। তাই আরও পড়াশোনা করি। আইআইএসসি-তে ভরতি হই।” ইসরো প্রধান আক্ষেপ করেন, “আমি জীবনে যা চেয়েছি, তা কখনও পায়নি। আমি চেয়েছিলাম উপগ্রহ কেন্দ্রে যোগ দিতে, কিন্তু, আমার পোস্টিং হল বিক্রম সারাভাই সেন্টারে।”

খালি পায়ে কলেজ যাত্রা থেকে ইসরোর চেয়ারম্যান, অনুপ্রেরণা দেবে শিবনের জীবনযুদ্ধ খালি পায়ে কলেজ যাত্রা থেকে ইসরোর চেয়ারম্যান, অনুপ্রেরণা দেবে শিবনের জীবনযুদ্ধ Reviewed by khokan on 04:49 Rating: 5

লক্ষ্মী ছেলেরা কাজে যোগ দাও: অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর, ১০ সিদ্ধান্তের পরে উঠছে ধর্মঘট

07:05

দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোনও ঘটনা ঘটলেই কড়া ব্যবস্থা। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই কার্যত ধর্মঘট তোলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন নবান্নের বৈঠকে হাজির জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। তবে এখনও বাকি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। আর মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মঘট উঠে গেলেই বিক্ষোভাকারীদের দাবি মতো তিনি আহত চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে দেখতে যাবেন।

এদিনের বৈঠক এক গুচ্ছ সিদ্ধান্তও নিয়েছে রাজ্য সরকার। দেখে নিন এক নজরে–

•  ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলার ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে নজর রাখবে প্রশাসন। যদি ঘটেও থাকে, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ।

• গোটা রাজ্য একটি জরুরিভিত্তিক নম্বর এবং ই-মেল আইডি চালু করা হবে যেখানে বিপদে পড়লে চিকিৎসকরা জানাবেন।
• নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে পুলিশ পদক্ষেপ না করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সাসপেন্ড।

• হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে যে যে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেগুলি কী পরিস্থিতিতে রয়েছে, কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা যাচাই করা হবে।

• রোগী কল্যাণ সমিতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
• অনেক সরকারি হাসপাতালে গেট নেই। সর্বত্র গেট তৈরি হবে।

• জরুরি বিভাগে থাকবে একটি করে কোলাপসিবল গেট। তার ভিতরে দু’জনের বেশি রোগীর আত্মীয় ঢুকতে পারবে না।

• চিকিৎসকদের উপরে আক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে সরকার।

• রোগীদের আত্মীয়দের জন্য সরকারের যে গ্রিভ্যান্স সেল বা অভিয়োগ গ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে, সে গুলিকে আরও সক্রিয় ও দৃশ্যমান করা হবে।

• চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে কলকাতা ও জেলায় জেলায় একজন করে নোডাল অফিসার রাখবে পুলিশ।

লক্ষ্মী ছেলেরা কাজে যোগ দাও: অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর, ১০ সিদ্ধান্তের পরে উঠছে ধর্মঘট লক্ষ্মী ছেলেরা কাজে যোগ দাও: অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর, ১০ সিদ্ধান্তের পরে উঠছে ধর্মঘট Reviewed by khokan on 07:05 Rating: 5
Powered by Blogger.