তিথি দে ও দেবীপ্রসাদ ভট্টাচার্যর বিয়েটা আর পাঁচটা বিয়ের মতো নয়। বিয়েতে ছিল না কোনো জাঁকজমক। বিয়েটা হল সাদামাটা রেজিস্ট্রি ম্যারেজ। তার জন্য খরচ হয়েছে সামান্য। অনেকে ভাববেন তারা টাকা বাঁচানোর জন্য এইরকম সাদামাটা ভাবে বিয়ে করেছে। আবার অনেকে ভাববেন হয়ত তাদের খরচ করার সামর্থ ছিল না। কিন্তু এরা যে কারনে সাদামাটা ভাবে বিয়েটা করলেন তা শনলে আপনি অবাক তো হবেন তার সাথে সাথে এদের প্রতি আপনার শ্রদ্ধা অনেকগুন বেড়ে যাবে। দেখে নেওয়া যাক, তাদের এই ত্যাগের পিছনে রয়েছে কি কারণ –
তিথি দে ও দেবীপ্রসাদ ভট্টাচার্যর বিয়েবিয়েটা ওনারা করেছেন একেবারে শুধুমাত্র খাতা কলমে। যার জন্য তাদের খরচ হয়েছে সামান্য। তাদের কথা অনুসারে তারা তাদের বিয়ের আনন্দটা ভাগ করে নিতে চেয়েছেন সেইসব মানুষদের সাথে, “যারা আমাদের মতো Privileged নন…তাদের জন্ম বা দৈনন্দিন জীবনযাপন সবকিছুই আমাদের তুলনায় অনেক কঠিন…আমরা সত্যি মাঝে মাঝে ভাবি যদি আমাদের জন্মটাও এরকম একটি পরিবেশে হতো, আজ কি করতাম জানিনা…!! তাই, আমি আর আমার husband বহুদিন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমাদের বিয়ের খরচ থেকেই আমরা পুরোপুরি না পারলেও, কিছুটা হলেও ‘মানুষ’ হওয়ার পথে এগোবো এই শুভ কাজটা দিয়েই…আমরা ঠিক করেছিলাম, বিয়েতে জমজমাট অনুষ্ঠান, চোখ ধাঁধানো আলোর সাজ, সোনা-হীরের গয়নার বা বেনারসি শাড়ীর জৌলুশ এর জন্য যা খরচ হতো, সেই পরিমাণ টাকা দিয়ে আমরা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর পাশে যদি একটু হলেও দাঁড়াতে পারি, নিজেদের ধন্য মনে করবো…আমাদের দুজনেরই মনে হয়েছে, এর চেয়ে ভালোভাবে আমরা বিয়েটা করতে পারতামই না”।
বিয়ের অনুষ্ঠান না করে গরীবদের পাত পেতে খাওয়ার ব্যবস্থা করলেনওনাদের কথা অনুসারে – “সেজে বিয়েটা করলে সারাজীবন একটা regret থেকে যেতই যে, যেটা মুখে বলি, সেটা কাজে করতে পারিনা…বিশ্বাস করবেন না, আমরা এই কাজটা করার পর সেই মানুষগুলোর অনাবিল হাসি আর প্রাণভরা আশীর্বাদ পেয়ে মনে হচ্ছে, কেউ কোটি টাকা দিলেও এই আনন্দ আর সুখটা আমরা পেতাম না…কতলোক নিজেদের থেকে এসে আমাদের আশীর্বাদ করে গেলেন…!!!! বিয়েটা আমাদের কাছে সত্যি memorable হলো..”।
খাওয়ার পর বাড়ির জন্য নিয়ে গেলেনওনারা আরো বলেছেন – “আরো কিছু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা আমাদের আছে…আজ একদিনে সবটা পারিনি…খুব তাড়াতাড়িই সেগুলোও করার পরিকল্পনা আমরা রেখেছি… Traditionally বিয়ে করিনি, তাই, যারা রীতি-রিয়াজ মেনে বিয়ে করার স্বপক্ষে, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী…আর যারা আমাদের মানসিকতাকে সমর্থন করবেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞ… আমাদের জীবনের নতুন পথচলায় আপনাদের সবার আশীর্বাদ কাম্য… :)”
এইভাবেই বৌভাত সারলেন নতুন বউকে আশীর্বাদ করল জানি না, তবে আমাদের তরফ থেকে আপনাদের আশীর্বাদ জানাই যেন আপনাদের নতুন জীবন খুশিতে ভরে উঠুক। আপনাদের মতো মানুষ এ পৃথিবীতে সচরাচর দেখা যায় না। এইভাবেই চিরকাল ভালো কাজ করতে থাকুন।
সত্যই এই ত্যাগ সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। ওনাদের কথা যাতে সকলের কাছে পৌছাতে পারে তার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। সত্যিই তো আমরা বিয়েতে যে পরিমাণ বাজে খরচা করে থাকি তা সমাজের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর।
বিয়েতে দেখা যায় নিজের পয়সার মাহাত্য দেখানোর জন্য অনেক সময় অনেক বাজে খরচ করে ফেলি। আমাদের এই প্রতিবেদন টি পড়ে যদি একজনও অনুপ্রাণিত হন সেইজন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। আসুন না এই রকম অনেক বাজে খরচ কমিয়ে সেই টাকায় কিছু গরিব মানুষের কাজে আসি।
এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করে সচেতনতা বাড়িয়ে তুলুন। বাজে খরচ বন্ধ করুন। কমেন্ট করে ওনাদের আশীর্বাদ জানান। (Facebook.com/WestBengal24x7.in)
Reviewed by Dhuliyan City
on
23:19
Rating:
No comments: