এই বনেদি পরিবারের দূর্গাপূজোকে ঘিরে লুকিয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস

ফরাক্কা ১৫ সেপ্টেম্বর :- মুর্শিদাবাদ জেলার অধিকাংশ গ্রামীণ বনেদি পরিবারের দূর্গাপূজোকে ঘিরে লুকিয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস।সেই ইতিহাসের সন্ধানে ফরাক্কার পলাশি গ্রামের মিশ্র বাড়িতে।আজ থেকে প্রায় ৪১৭ বছর পূর্বে মিশ্র বাড়িতে দূর্গাপূজোর প্রচলন হয়।যদিও মিশ্র বাড়ির এই পূজোর সূচনা হয় মালদহ জেলার খেজুরিয়া ঘাটে।১৩১১ বঙ্গাব্দে গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় দেবির মাটির মন্দির।মিশ্র বাড়ির লোকেরা উদ্বাস্তু হয়ে চলে আসেন ফরাক্কার পলাশি গ্রামে।ধর্মীয় রীতি মেনে রথযাএার দিন পূজাচ্চর্নার মাধ্যমে দেবির কাঠামোয় প্রলেপ দিয়ে মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়।মহালয়ার দিন থেকে শুরু হয় চন্ডীপাঠ মিশ্র বাড়িতে।এই বাড়ির পুজোকে ঘিরে রীতিমতো উন্মাদনা সৃষ্টি হয়।প্রাচীন রীতি মেনে আজও নবমিরদিন পশুবলি দেওয়া হয়।জাগ্রত দেবীর কাছে মনোস্কামনায় বহু মানুষ পশু বলি দেন।শতাধিক ছাগবলি হয় এই বাড়িতে।মিশ্র বাড়ির পুজোর প্রাচীন ইতিহাস জানালেন বাড়ির সন্তান ধীরাজ মিশ্র।মিশ্র পরিবারের পূর্বপুরুষ ছিলেন ঠাকুর মিশ্র।তার কোন কন্যা সন্তান ছিলনা।ঠাকুর মিশ্র ছিলেন দরিদ্র ব্রাক্ষন।পুজোচ্চনা করে খুবি কষ্টে সংসার চালাতেন।একদিন এক শাঁখারি গঙ্গার তীর দিয়ে শাঁখা বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন।গঙ্গার তীরে এক কিশোরী শাঁখারির কাছে শাঁখা পরতে চায়।শাঁখারি কিশোরীকে শাঁখা পরিয়ে দাম চাইলে কিশোরী বলে তার বাবা ঠাকুর মিশ্র দাম দেবেন।শাঁখারি ঠাকুর মিশ্রর বাড়িতে এসে কিশোরীর কথা মতো শাঁখার দাম চান।শাঁখারির কথা শুনে ঠাকুর মিশ্র হতভম্ব হয়ে পড়েন।তার তো কোন কন্যা নেই!শাঁখারি বলেন কিশোরী বলেছে বাবাকে বলো বাড়ির কোঠায় লাল সালুর নিচে কড়ি রাখা আছে। ঠাকুর মিশ্র শাখারির কথামতো ঘরের ভিতর কোঠার লাল সালু সরাতেই কড়ি দেখে চমকে ওঠেন।সেই রাতেই ঠাকুর মিশ্র মা ভবতারিণীর স্বপ্নে দেখা পান।ভবতারিণীর স্বপ্নে দেখা মেলার পর ভোর হতেই ঠাকুর মিশ্র ছুটে যান গঙ্গার তীরে।ঠাকুর মিশ্র দেখতে পান মাঝ গঙ্গায় এক কিশোরী দশ হাতে শাঁখা পরে দাঁড়িয়ে আছে।সেই রাতেই মা ভবতারিণী পূণরায় ঠাকুর মিশ্রকে স্বপ্নে নির্দেশ দেন তিনি তাঁর হাতে পূজিত হতে চান।গঙ্গা থেকে তাঁকে নিয়ে এসে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করতে।দেবীর নির্দেশ প্রত্যাখান করেন ঠাকুর মিশ্র দারিদ্রতার কারণে।দেবী ভিক্ষে করে পূজিত হওয়ার কথা বলেন।দেবীর নির্দেশে ঠাকুর মিশ্র ভিক্ষে করে মিশ্র বাড়িতে প্রথম পুজোর সূচনা করেছিলেন।বর্তমানে মিশ্র বাড়ির অথর্নৈতিক সন্কট মোচন হলেও প্রাচীন রীতিমেনে আজও নিকট আত্মীয়দের কাছে ভিক্ষা গ্রহন করে দেবী পূজিত হয়ে চলেছে।১৩১১ বঙ্গাব্দে গঙ্গা ভাঙ্গনে দেবীর থানের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরে।দেবীর থানে দুটি বড় সাপের দর্শন পান মিশ্র পরিবারের লোকেরা।রাতে দেবীর স্বপ্নাদেশ পান মিশ্র পরিবার।দেবী অন্যএ প্রতিষ্ঠিত হতে চান।দেবীর নির্দেশে মিশ্র পরিবার দেবীর থান তুলে নিয়ে আসেন ফরাক্কার পলাশি গ্রামে।প্রতিষ্ঠিত করা হয় দেবীর মন্দির।ধুমধাম সহকারে আজও পূজিত হয়ে চলেছেন মা দূর্গা।বহু দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন জাগ্রত দেবীর দর্শনে।

সূত্রঃntvwb

এই বনেদি পরিবারের দূর্গাপূজোকে ঘিরে লুকিয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস এই বনেদি পরিবারের দূর্গাপূজোকে ঘিরে লুকিয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস Reviewed by Dhuliyan City on 07:43 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.